পরিচয়-
মাওলানা আবুল কালাম মুরাদ,
অধ্যক্ষ,ছুরতিয়া ফাজিল মাদ্রাসা,
বাংলাবাজার,ঝিলংজা, সদর,কক্সবাজার।
হুজুরের জন্মঃ
তিনি চকরিয়া উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
হুজুরের প্রাথমিক শিক্ষা জীবনঃ
তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় পবিত্র কোরআন তালীমের মক্তব থেকে। পরে তিনি চকরিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করেন।
হুজুরের উচ্চশিক্ষা অর্জনঃ
তিনি উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় তথা আলিম শেষ করে চট্রগ্রামের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার মেধাতালিকায় কৃতিত্বপূর্ণ স্বাক্ষর রাখেন।তিনি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ অর্জনের পর ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ভর্তি হন। একই সাথে তিনি মাদ্রসা শিক্ষাও চালিয়ে যান। ধাপে ধাপে তিনি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সের পাশা পাশি ফাযিল, কামিলও শেষ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন সমাপ্তির পর তিনি বিভিন্ন গভেষণা মূলক কর্মকান্ডের সাথে যুক্তহন। পরবর্তীতে তিনি দক্ষিণ চট্রগ্রামের অন্যতম মোড়ল দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুরুতিয়া ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।
মাদ্রসা শিক্ষাকে আধুনিকায়নে তাঁর প্রয়াসঃ
অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পর থেকে তিনি মাদ্রসা শিক্ষাকে কিভাবে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্য করা যায় সেদিকে নজর দেন তারই ধারাবাহিকতায় তিনি মাদ্রসা শিক্ষার সিলিবাসভুক্ত বিষয় গুলোকে আধুনিকায়নের নিমিত্তে বিভিন্ন বই রচনা শুরু করেন।তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে.. মিযান ও মুসশায়েবে অাধুনিক বাংলা বিশ্লেষন। ইতিহাস বিষয়েও বিভিন্ন বই তিনি রচনা করেন। তিনি ইংরেজী বিষয়েও সমান পারদর্শী ছিলেন যখন কোন ইংরেজী শিক্ষক মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকলে তখন ঐ শিক্ষকের ক্লাসে স্থলাভিষিক্ত হতেন প্রায় সময় মাওলানা আবুল কালাম মুরাদ সাহেব।
ইসলাম প্রচারনায় তাঁর অবদানঃ
মুহতারাম মাওলানা আবুল কালাম মুরাদ সাহেব সুমিষ্টিবাসী কন্ঠস্বরের অধিকারী ছিলেন। ইসলামের প্রকৃত আকিদাকে সাধারন মুসলিম সমাজের মাঝে পৌছেদিতে সদা তৎপর ছিলেন। কোন মাহফিলে দাওয়াত দিলে তিনি হাদিয়ার বিষয়ে কোন জোরাজোরি করতেন না। চকরিয়া পৌরসভার একটি প্রসিদ্ধ মসজিদে দীর্ঘদিন খতিবের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ বেতার কক্সবাজারে অনেক সময় ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা পেশ করেন। তিনি সব সময় মাঠে ময়দানে বিদাআত, তাগুতের বিরুদ্ধে মানুষদের সতর্ক করতেন। ওয়াজ মাহফিলে তিনি সাধারন মুসলিমদের ইমান আমল ঠিক করার জন্য নির্দেশনা মূলক বক্তব্য দিতেন।
তিনি বক্তব্য পেশ করার সময় উপমহাদেশের অন্যতম দার্শনিক ও ইসলামী কবিদের শিরোমণি আল্লামা ইকবালের কবিতার পঙ্খী বেশি বলতেন।
তালিমুল দ্বীনে তাঁর কৃতিত্বঃ
দীর্ঘদিনের মাদ্রাসায় পাঠদানে তিনি অসংখ্য ছাত্র- ছাত্রী তৈরী করেছেন। যারা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন কর্মপেশায় নিয়োজিত আছেন।অসংখ্য আলেম সৃষ্টিকরে গেছেন এই ধর্মীয় রাহবার।তিনি মাদ্রাসায় আসার পর থেকে তাঁর উৎসাহ উদ্দীপনায় অসংখ্য ছাত্রছাত্রী বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি/ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অনুপ্রেরণা পায়।অনেকে দ্বীনি বিষয়ে উচ্চতর ডিঘ্রি অর্জনের নিমিত্তে তাঁর পরামর্শে দ্বীনি শিক্ষার উচ্চতর ডিঘ্রি অর্জন করেন।
মাদ্রাসার অবকাঠামো সংস্কারে তিনিঃ
প্রিয় মুহতামিম মাওলানা আবুল কালাম মুরাদ সাহেব মাদ্রাসার অবকাঠামোগত উন্নয়নে যতেষ্ট ভূমিকাপালন করেন।তাঁরই প্রচেষ্টায় মাদ্রসার পুরাতন জরাজীর্ণ ভবণকে সংস্কার করেন।মাদ্রাসার হোস্টেল ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন করেন। মাদ্রাসায় নতুন জনবল বৃদ্ধি করেন। মাদ্রসাকে বালক ও বালিকা উভয় পড়ার উপযোগী করে তুলে নারী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রসারে ব্যাপক অবদান রাখেন।
সেই সাথে ছাত্রছাত্রী বৃদ্ধি পেলে নতুন ভবন তৈরী করে মাদ্রসার অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধন করেন। তিনি ছিলেন একজন নিষ্ঠাবান আদর্শ শিক্ষক তিনি সবসময় আন্তরিকতার সাথে কাজ করতেন।
প্রিয় মুহতামিমের ইন্তকালঃ
তিনি ১০/০৭/২০২০ সকালে মহান রবের ডাকে ছাড়া দিয়ে অস্থায়ী দুনিয়া থেকে স্থায়ী পরকালীন জীবনে চলেগেছেন। আল্লাহ তায়ালা মরহুমকে জান্নাতুল ফেরদৌসরে আলে মকাম দান করুন। আমিন।
লেখকঃ
ইমরান খান তুহিন
আহবায়ক,তথ্য প্রযুক্তি লীগ,কক্সবাজার জেলা।
MSS,অান্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ,চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
কামিল(MA),ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়,কুষ্টিয়া।